• বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৭ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

গ্যাস সংকট নিরসনে আরও এক মাস লাগবে

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০২৪  

ঘূর্ণিঝড় রেমালে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় গত প্রায় আড়াই মাস ধরে বন্ধ রয়েছে আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) একটি টার্মিনাল। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এর ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিটটি (এফএসআরইউ)। মেরামত শেষে দেশে এলেও প্রতিস্থাপনের সময় একটি যন্ত্রাংশে পাওয়া যায় ত্রুটি। জ্বালানি বিভাগ দাবি করছে, আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় আরও অন্তত ১ মাস সময় লাগবে এটি প্রতিস্থাপনে। ফলে পুরোটা সময়ই জাতীয় গ্রিডে ৬০ কোটি ঘনফুট গ্যাসের সংকট থাকবেই বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

একই সঙ্গে কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ রয়েছে ভারতের আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিটের উৎপাদন। বন্ধ রয়েছে মাতারবাড়ি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদনও। গ্যাসের অভাবে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকেও উৎপাদনে পোহাতে হচ্ছে দুর্ভোগ। ফলে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন কমে গেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এতে করে রাজধানীর বাইরে বেড়েছে তীব্র লোডশেডিং।

জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, নষ্ট হয়ে যাওয়া যন্ত্রাংশটি গত জুলাই মাসের ২৮ তারিখ ঠিক করেন খোদ সিঙ্গাপুর থেকে আসা প্রকৌশলীরা। চলতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে এটি পুনঃপ্রতিস্থাপনের প্রস্তুতিও নিয়েছিল জ্বালানি বিভাগ। কিন্তু এরই মধ্যে দেশজুড়ে তৈরি হয় রাজনৈতিক অস্থিরতা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে ভেঙে যায় তৎকালীন মন্ত্রিসভাও। যার প্রভাব পড়ে এফএসআরইউটি প্রতিস্থাপনেও। দাপ্তরিক নানা জটিলতাসহ অন্যান্য কারণে আগস্টের ১৫ তারিখ পেরিয়ে গেলেও এটি প্রতিস্থাপন করা যায়নি। বাংলাদেশ তেল, গ্যাস ও খনিজ সম্পদ করপোরেশন বলছে এখনো অন্তত ১ মাস সময় লাগবে। এতে করে গ্যাস সংকট সহসাই কাটছে না বলেও জানানো হয় প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে। তবে জ্বালানি বিভাগ এখনো দাবি করছে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকার কারণেই এটি সম্ভব হয়নি।

দুটি টার্মিনালের একটি বন্ধ থাকায় আমদানিকৃত গ্যাসের অর্ধেকটা মাত্র সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে। ফলে দেশব্যাপী নানা উত্থান-পতন শেষে জনজীবন পুনরায় স্বাভাবিক হয়ে এলেও কাটছেই না গ্যাসের সংকট। বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্প-কারখানার পাশাপাশি অন্যান্য খাতেও দেখা দিয়েছে গ্যাসের তীব্র সংকট। বেশিরভাগ কারখানাতেই চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের চাপ ১৫ পিএসআই থাকার কথা থাকলেও পাওয়া যাচ্ছে মাত্র ৪ পিএসআই। ক্রেতাদের দাবি অনুযায়ী ক্রয়াদেশ পূরণে বাধ্য হয়ে কিছু কারখানায় ডিজেল বা বিকল্প উপায়ে মেশিন চালু করলেও বেশিরভাগ কারখানাতেই ঘুরছে না চাকা।

গত ২৭ মে সাগরে ভাসতে থাকা ভাঙা একটি পন্টুনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সামিটের ভাসমান এলএনজি টার্মিনালের (ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট বা এফএসআরইউ) ব্যালাস্ট ট্যাংকটি। সিঙ্গাপুর থেকে মেরামত শেষে গত জুলাই মাসের ১৪ তারিখ এটি দেশে এলেও প্রতিস্থাপনের সময় একটি যন্ত্রাংশে ত্রুটি দেখা দেয়। সিঙ্গাপুর থেকে আসা প্রকৌশলীরা এটি ঠিক করেন গত মাসের ২৮ তারিখ। চলতি মাসের ১০ তারিখের মধ্যে এটি প্রতিস্থাপন হয়ে যাবে বলেও তৎকালীন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। তখন তিনি আবহাওয়া অনুকূলে না থাকাকে দায়ী করেছিলেন। একই দাবি এখনো করছেন জ্বালানি বিভাগের সচিব নুরুল আমিন। জনকণ্ঠকে তিনি বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে সমুদ্রের পানি ঘোলা। আমাদের দেশীয় ডুবুরিদের অভিজ্ঞতা মাত্র ১৫ মিটার নিচে গিয়ে কাজ করার। এজন্য অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডসের মতো দেশ থেকে ডুবুরি আনা হয়েছে। যাদের আরও গভীরে গিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কিন্তু এর নিচে গিয়েও কাজ হচ্ছে না। কারণ এত নিচে গিয়েও ব্যালস্ট টাংকটি দৃশ্যমান হচ্ছে না। ফলে এটি প্রতিস্থাপনও করা যাচ্ছে না।

পেট্রোবাংলার তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে দৈনিক গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা ৩১০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ভাসমান দুটি টার্মিনালে রিগ্যাসিফিকেশনের মাধ্যমে দৈনিক এলএনজি সরবরাহের সক্ষমতা ১১০ কোটি ঘনফুট। এ অনুযায়ী জাতীয় গ্রিডে গ্যাসের মোট সরবরাহ সক্ষমতায় এলএনজির অংশ ৩০ শতাংশের বেশি। কিন্তু একটি টার্মিনাল বন্ধ থাকায় এখান থেকে সরবরাহ হচ্ছে মাত্র ৬০ কোটি ঘনফুট। আগামী আরও এক মাস এই সংকট পোহাতে হবে জানিয়ে পেট্রোবাংলার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইনস) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান খান জনকণ্ঠকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত এফএসআরইউটি মেরামত করে দেশে আনা হলেও নানা কারণে এখনো এটি প্রতিস্থাপন করা যায়নি। চলতি মাসেও এটি সম্ভব হবে বলে মনে হচ্ছে না। আরও মাসখানেক সময় লাগতে পারে।

এদিকে কারিগরি ত্রুটির কারণে বন্ধ হয়ে গেছে কক্সবাজারের মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রর একটি ইউনিট। একই কারণে বন্ধ আছে ভারতের ঝাড়খন্ডে নির্মিত আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রেরও একটি ইউনিট। এতে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুতের সরবরাহ না থাকায় দুই দিন ধরে ঢাকার বাইরে বেড়েছে লোডশেডিং।

বিদ্যুৎ বিভাগের তথ্যমতে দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াট। তিনদিন ধরে দেশে লোডশেডিং বাড়তে শুরু করেছে। এ সময় দিনে সর্বোচ্চ বিদ্যুতের চাহিদা হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট। ঘাটতি হয়েছে দেড় হাজার মেগাওয়াটের বেশি। ফলে ঢাকার বাইরে কোনো কোনো গ্রামে দিনে ৪-৫ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে ভুগছে মানুষ।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্যমতে বলছে, কয়লাচালিত মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট আছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে ১০ আগস্ট বন্ধ হয়ে যায় উৎপাদন। পাশাপাশি ৮০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার দুটি ইউনিট নিয়ে আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রেরও একটি ইউনিট বন্ধ। গড়ে তারা প্রায় দেড় হাজার মেগাওয়াট করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করছিল। উৎপাদন বন্ধ থাকার বিষয়ে গত বুধবার আদানির পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, মঙ্গলবার কারিগরি কারণে একটি ইউনিট থেকে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এখন দিনে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে প্রতিষ্ঠানটি। দ্রুত সমস্যা সমাধানে কাজ করছে তারা। উৎপাদনে ফিরতে আরও এক মাস লাগতে পারে।

দেশে দিনে গ্যাসের চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ৩০০ কোটি ঘনফুট সরবরাহ করে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হয়। কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুটি ভাসমান টার্মিনালের মাধ্যমে এলএনজি থেকে আসে ১১০ কোটি ঘনফুট। সামিটের এলএনজি টার্মিনাল গত ২৭ মে থেকে বন্ধ। অ্যাকসিলারেটর এনার্জির টার্মিনাল থেকে এখন সরবরাহ করা হচ্ছে ৬০ কোটি ঘনফুট। দিনে এখন গ্যাস সরবরাহ নেমে এসেছে ২৬০ কোটি ঘনফুটে। ফলে বিদ্যুৎ খাতে গ্যাস সরবরাহ নেমে এসেছে ৯০ কোটি ঘনফুটের নিচে, যা সর্বোচ্চ ১২০ কোটি ঘনফুট পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়েছিল। আড়াই মাস আগেও গ্যাস থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করা হতো। এখন হচ্ছে ৫ হাজার মেগাওয়াটের কিছু বেশি।

গ্যাস-বিদ্যুৎ উভয়ের সংকটে নাজেহাল জনজীবন। শিল্পোদ্যোক্তারা বলছেন, গ্যাসের বিকল্প হিসেবে জেনারেট ব্যবহার করতে গেলেও কমপক্ষে ৬ পিএসআই চাপ প্রয়োজন। সেই চাপও থাকছে না। বাংলাদেশ নিটওয়্যার মেনুফেকচারারস অ্যান্ড এক্সপোর্টারারস অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান জনকণ্ঠকে বলেন, গ্যাস সংকট তো সারাবছরই আমাদের পোহাতে হয়। তবে সাম্প্রতিক সময়গুলোতে একটু বেশি হচ্ছে। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে যখন আবার কারখানা চালু হলো তখন গ্যাসের চাপ প্রয়োজনের তুলনায় কম পাওয়া যাচ্ছে। আমাদের কিছু যন্ত্রপাতি পুরনো থাকায় ডিজেল দিয়েও চালানো যায়। কিন্তু যাদের এ সুবিধা নেই তারা কি করবে? এমনিতেই আন্দোলনের কারণে কয়েকদিন কারখানা বন্ধ রাখতে হয়েছে। এখন যদি গ্যাসের চাপের কারণে উৎপাদন ব্যাহত হয় তাহলে ব্যবসায়ীরা কোথা যাবে? অনেকে আবার জেনারেটর দিয়েও মেশিন চালায়। কিন্তু জেনারেটর চালাতে গেলেও কমপক্ষে ৬ পিএসআই (প্রতি বর্গইঞ্চি) চাপ প্রয়োজন হয়। প্রায় দিনই সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সাড়ে ৩-৪ পিএসআই চাপ পাওয়া যাচ্ছে। বিকেলের পর সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ পিএসআই চাপ পাওয়া গেছে। যত দ্রুততম সময়ে পারা যায় এফএসআরইউটি ঠিক করার দাবি জানাচ্ছি।

একই অবস্থা বাসাবাড়ি, সিএনজি স্টেশন ও শিল্প-কারখানাগুলোতেও। জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। রাজধানীর অনেক এলাকায় বাসবাড়িতে গ্যাস নেই। বাধ্য হয়ে নগরবাসীকে বৈদ্যুতিক চুলা ও লাকড়ি জ্বালিয়ে রান্নার কাজ সারতে হচ্ছে। নগরীর ফিলিং স্টেশনগুলোতেও যানবাহনের দীর্ঘ লাইন লেগে আছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে গ্যাস পাচ্ছে না যানবাহনগুলো।

গ্যাস সংকটের কারণে রাজধানীর সড়কগুলোতে কমে গেছে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন সিএনজিচালিত অটোরিক্সার চালকরাও। সিএনজি স্টেশন ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফারহান নূর সাংবাদিকদের বলেন, যেখানে একটি সিএনজি স্টেশনের গ্যাসের চাপ লাগে ১৫-১৭ পিএসআই সেখানে এখন চাপ থাকছে মাত্র ২-৩ পিএসআই। যার কারণে যানবাহনে ৫০-৬০ টাকার বেশি গ্যাস ঢুকছে না। তাতেও দীর্ঘ সময় লাগছে। এই অবস্থায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে সিএনজি স্টেশনগুলো।

এদিকে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ না পাওয়ায় রাজধানীর বাইরের বিভিন্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র লোডশেডিং। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) তথ্য মতে, তীব্র দাবদাহের মধ্যে গত এক সপ্তাহে দেশে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা ছাড়িয়েছে ১৫ হাজার মেগাওয়াটের উপরে। তার বিপরীতে উৎপাদন হয়েছে ১৪ হাজার থেকে সাড়ে ১৪ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত। ফলে সরকারি হিসাবেই লোডশেডিং করতে হচ্ছে ৫শ’ থেকে ১ হাজার থেকে মেগাওয়াট পর্যন্ত। কিন্তু বাস্তব চিত্র আরও ভয়াবহ বলে দাবি পল্লী এলাকার বাসিন্দাদের। আন্দোলন পরবর্তী সময়ে ঢাকা মহানগরীতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকলে অন্য শহরগুলোতে ভোগান্তি বাড়ছে।

গত কয়েকদিনে লোডশেডিংয়ে বেশি নাজেহাল হতে হচ্ছে সিলেট, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, রংপুর, বরিশাল অঞ্চলের বাসিন্দাদের। সরবরাহ না থাকায় বাধ্য হয়ে লোডশেডিং করতে হচ্ছে বলে স্বীকার করেছেন এসব এলাকার বিদ্যুৎ সরবরাহে নিয়োজিত কর্মকর্তারাও। পিডিবির হবিগঞ্জ অঞ্চলের এক প্রকৌশলী বলেন, বলেন, আমাদের শহরে দৈনিক চাহিদা ১৭-১৮ মেগাওয়াট পর্যন্ত। কিন্তু আমরা সরবরাহ পাচ্ছি ১২-১৩ মেগাওয়াট। ফলে বাধ্য হয়ে আমাদের লোডশেডিং করতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের কিছুটা ভোগান্তি হচ্ছে এক্ষেত্রে। তবে আশা করছি ঈদের ছুটিতে লোডশেডিংয়ের দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

একই অবস্থা ময়মনসিংহেও। বৃহত্তর ময়মনসিংহে এই ক’দিনে বিদ্যুতের সর্বোচ্চ চাহিদা গিয়ে দাঁড়িয়ে ২৫০ মেগাওয়াটে। কিন্তু বিপরীতে সরবরাহ পাচ্ছে মাত্র ১৬০-১৮০ মেগাওয়াট। এতে এখানে লোডশেডিংও বেশি হচ্ছে। নগরীর কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা মেহেরুন্নেসা মৌ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, তীব্র গরমে যখন হাঁসফাঁস অবস্থা তখন ঘরে আসলে বিদ্যুৎ থাকছে না। এত বিদ্যুৎ কই যায়? যদি সাধারণ মানুষকেই কষ্ট পোহাতে হয় তাহলে শতভাগ বিদ্যুতায়নের সুফল হলো কি?

ময়মনসিংহের পরে ভোগান্তিতে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে রংপুর বিভাগ। এই বিভাগে রয়েছে রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও ও কুড়িগ্রাম জেলা। গত কয়েক দিন থেকে এই বিভাগে দৈনিক ১৫০-২০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুতের ঘাটতি রয়েছে। দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র এই অঞ্চলের বিদ্যুতের চাহিদার অনেকটা পূরণ করে। কিন্তু জ্বালানি সংকটে সেটিও পুরো দমে চলছে না। লোডশেডিংয়ের কারণে এই অঞ্চলেও সেচ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।