• বুধবার ১৬ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • আশ্বিন ৩১ ১৪৩১

  • || ১১ রবিউস সানি ১৪৪৬

বটগাছ পাতা ও পাখি

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ২৮ আগস্ট ২০২৪  

এক গ্রামের উত্তর দিকে ছিল গভীর এক বন। সেই বনে অনেক গাছ। গাছেদের পাতা সবুজ, সতেজ আর মনোরম। বনের মাঝে এক বিশাল বটগাছ।

তার ডালপালায় পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে বনের পরিবেশ হয়ে উঠত সজীব।
সেই  বটগাছের এক পাতা ছিল  খুবই চঞ্চল আর কৌতূহলী। পাতার নাম শ্যামা। সে প্রতিদিন সূর্যের আলোয় ঝলমল করত আর হাওয়ায় দুলত।

শ্যামার খুব ইচ্ছা ছিল আকাশে উড়ে যাওয়া পাখিদের মতো মুক্ত হয়ে উড়তে।
একদিন শ্যামা এক গাছে দেখতে পেল এক ছোট্ট পাখি। পাখিটির নাম পিউ। পিউ বনের সবচেয়ে সুন্দর গায়ক।

সে প্রতিদিন সকালে মিষ্টি সুরে গাইত। তার গান শুনে সবাই মুগ্ধ হতো।
 শ্যামা একদিন পিউকে বলল, ‘পিউ, তুমি কত সুন্দর করে আকাশে উড়ে বেড়াও! আমিও যদি তোমার মতো উড়তে পারতাম!’

পিউ হাসি দিয়ে বলল, ‘শ্যামা, তুমি তো গাছের পাতা। তোমার কাজ হলো গাছকে সজীব রাখা আর আমাদের কাজ হলো আকাশে উড়ে বেড়ানো। আমরা সবাই মিলেই তো প্রকৃতিকে সুন্দর করে তুলি।


শ্যামা কিছুটা মন খারাপ করল, কিন্তু পিউয়ের কথা সে ভাবতে লাগল।

 পিউ তাকে বলল, ‘তুমি কি জানো  শ্যামা, তোমার সবুজ রং আর সতেজতা আমাদের জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ? তুমি যদি না থাকতে, তবে আমরা কোথায় বিশ্রাম নিতাম? তোমার ছায়ায় শান্তি পাই আমরা।’

শ্যামা বুঝতে পারল তার কাজের গুরুত্ব। সে নিজেকে গর্বিত মনে করতে লাগল। তার পর থেকে প্রতিদিন সে আরো সতেজ হয়ে উঠত আর পাখিরা তার ডালে এসে বিশ্রাম নিত।

একদিন হঠাৎ বনের মধ্যে এক ঝড় উঠল। গাছের পাতারা বাতাসে দুলতে লাগল।

 পিউ এসে শ্যামাকে বলল, ‘শ্যামা, ঝড় আসছে। তুমি গাছের শাখায় শক্ত হয়ে থাকো। আমরা সবাই মিলে একে প্রতিহত করব।’

শ্যামা তার সব শক্তি দিয়ে গাছের সঙ্গে লেগে রইল। পাখিরা তাদের ডানায় গাছকে ঘিরে রাখল। ঝড় থামল একসময়। কারো কোনো ক্ষতি হলো না।

বনের গাছের পাতা আর পাখিরা বুঝল একসঙ্গে থাকলে তারা যেকোনো বিপদ মোকাবেলা করতে পারে।

এভাবে গাছের পাতা আর পাখির মধ্যে এক মধুর বন্ধুত্ব তৈরি হলো। তারা বুঝল প্রকৃতির প্রতিটি অংশেরই নিজস্ব গুরুত্ব আছে। সবাই মিলে একে অপরকে সাহায্য করে প্রকৃতিকে সুন্দর করে তুলতে হয়।