• মঙ্গলবার ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ||

  • ভাদ্র ২৬ ১৪৩১

  • || ০৫ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬

সর্বশেষ:
বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের বিশেষ নিরাপত্তার আইন বাতিল আড়িয়াল বিল অবৈধ দখল মুক্ত করতে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ টেলিটকের সেবার মান উন্নত করার নির্দেশ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের আসামি পক্ষে আইনজীবী না থাকলে সহায়তা দেবে লিগ্যাল এইড ১১৫ জনের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে সাইবার ট্রাইব্যুনাল মামলা বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস পিএলসির সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ সীমান্ত হত্যা ঢাকা-দিল্লি সম্পর্কে বড় বাধা : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার মাধ্যমে শহীদদের ঋণ শোধ করতে হবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের সম্মান জানাবে সরকার বিদেশি নাগরিকদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে

শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ৬ আগস্ট ২০২৪  

শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর প্রথম কার্যদিবস মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে উল্লম্ফন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ৮৩ শতাংশ প্রতিষ্ঠান। এতে প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে প্রায় ২০০ পয়েন্ট। আর লেনদেন হয়েছে ৭০০ কোটি টাকার বেশি। অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে বেশিসংখ্যক প্রতিষ্ঠান। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি।

সূচকের বড় পতনের পাশাপাশি ডিএসইতে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার সর্বোচ্চসীমা স্পর্শ করেছে। 
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশে অস্থিতিশীল অবস্থা সৃষ্টি হলে শেয়ারবাজারে মন্দা অবস্থা দেখা দেয়। তার আগেও নানা ইস্যুতে শেয়ারবাজারে মন্দা চলছিল। প্রায় চার মাস ধরে শেয়ারবাজার পতনের মধ্যে রয়েছে। অর্থাৎ হাসিনা সরকারের শেষ সময়টা মোটেও ভালো যায়নি শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের জন্য।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে এক ধরনের অস্থিরতা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় শেয়ারবাজারেও লেনদেন বন্ধ থাকে একাধিক দিন। এমনকি পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজও শেয়ারবাজারে লেনদেন বন্ধ থাকার কথা ছিল। তবে ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব আন্দোলনের মুখে পড়ে সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পর থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে চলে যান শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর মঙ্গলবার দেশের সরকারি-বেসরকারি সব অফিস খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময় সকাল ১০টায় শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের শুরুতেই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখায় লেনদেনে অংশ নেওয়া প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠান। এতে শুরুতেই সূচকের বড় উত্থান হয়।
অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে এরপর কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম কমে যায়। এতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও কমেছে। অবশ্য এরপরও ১০৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম একদিনে যতটা বাড়া সম্ভব ততটাই বেড়েছে।
লেনদেনের প্রায় সময়জুড়ে দিনের সর্বোচ্চ দামে এ প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের বিপুল ক্রয় আদেশ আসে। বিপরীতে শূন্য হয়ে পড়ে বিক্রয় আদেশের ঘর। এই ১০৭ প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি আরও শতাধিক প্রতিষ্ঠান দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখায়। এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৮৩ শতাংশ বা ৩২৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৬০টি প্রতিষ্ঠানের।

আর ৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৯৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪২৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৭৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৭৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৩৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে।

শেয়ারবাজারের এ চিত্র সম্পর্কে ডিএসইর একাধিক সদস্য বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে শেয়ারবাজারে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। কারসাজির মাধ্যমে একটি চক্র শেয়ারবাজার থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। কিন্তু তাদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। যে কারণে শেয়ারবাজারের ওপর থেকে বিনিয়োগকারীদের আস্থা নষ্ট হয়ে যায়।

যার ফলে পতনের মধ্যে পতিত হয় শেয়ারবাজার। এখন শেখ হাসিনার সরকার পতন হওয়ায় বাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। একদিনের উত্থান দিয়েই বলা যাবে না বাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফিরেছে। আগামী কয়েকটি দিন শেয়ারবাজারের জন্য খুবেই গুরুত্বপূর্ণ।
সূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৪৯ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২০৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ৫৪২ কোটি ১৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ১০ জুলাইয়ের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এ লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার। কোম্পানিটির ৪৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা উত্তরা ব্যাংকের ৪৩ কোটি ৭১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অগ্নিসিস্টেম। এ ছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- টেকনো ড্রাগস, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, সিটি ব্যাংক, ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট এবং ফারইস্ট নিটিং।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৪৬৭ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫৯টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৫২টির এবং ১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ২৯ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকা।