• বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪ ||

  • কার্তিক ৭ ১৪৩১

  • || ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

স্বামী অক্ষম, সংসারের হাল ধরেছে স্ত্রী-প্রতিবন্ধী সন্তান

আজকের টাঙ্গাইল

প্রকাশিত: ১৭ আগস্ট ২০২৪  

সুলতান মিয়ার শারীরিক দুর্বলতাসহ শরীরে নানা রোগে বাসা বেঁধেছে। তাই শরীর আর চলে না, রিকশাও চালাতে পারেন না৷ এমতাবস্থায় ছেলে সাকিব (১৫) ও রাকিব (১৩) মাস্ক বিক্রির পেশায় নামলেও প্রতিবন্ধী জাকির হোসেন (১০) একটি তিন চাকার ভ্যান গাড়িতে মায়ের সঙ্গে চা-পান বিক্রি করেন। এতে তারা তিনবেলা খেয়েপড়ে বেঁচে থাকলেও দারিদ্র্য তাদের নিত্যসঙ্গী। ময়মনসিংহ নগরীর নৌমহল এলাকায় টিনের ভাড়া বাসায় বসবাস করেন সুলতান মিয়া ও বেদেনা খাতুন দম্পতি। তবে জেলার ফুলবাড়িয়া উপজেলার দেওখলা ইউনিয়নের কালিবাজাইল গ্রামে বেদেনার স্বামীর বাড়ি। দারিদ্র্য থেকে কিছুটা মুক্তি পেতেই ময়মনসিংহ নগরীতে চলে আসেন তারা। একসময় সুলতান মিয়া ও বেদেনা খাতুন দম্পতির তেমন টাকা না থাকলেও সুখের সংসার ছিল। স্বামীর রোজগারের টাকায় তিনবেলা খেয়েপড়ে তিন ছেলে সন্তানকে নিয়ে দিন পাড়ি দিচ্ছিলেন। ছেলেরা পড়াশোনা করে মানুষের মতো মানুষ হবে এমন মনোবাসনা ছিল তাদের৷ কিন্তু তা আর হলো না। সন্তানদের পড়াশোনা দূরের কথা, তিনবেলা পেটে ভাত জুটানোই কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে দুই ছেলে শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাস্ক বিক্রি করে। জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী ছোট্ট ছেলেটির পাওয়া সরকারি ভাতাও সংসারে খরচ করা হচ্ছে। তবুও তাকে ভাঙা হুইল চেয়ারে বসিয়ে মা-ছেলে ভ্যানে করে চা-পান, বিস্কুট ও সিগারেট বিক্রি করে ঘর ভাড়া দিয়ে তিনবেলা ঠিকমতো আহার জোগাতে পারছে না। কথা হয় বেদেনা খাতুনের সঙ্গে। তিনি বলেন, একসময় স্বামী রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও সংসারে সুখের বাতি মিটমিট করে জ্বলছিল। কয়েক বছর ধরে আমার শরীরে নানা রোগে বাসা বেঁধেছে। অক্ষম শরীরকে কিছুটা সুস্থ করাসহ সংসারের হাল ধরতে সন্তানদের নিয়ে কর্মে নেমেছি। অন্তত ভিক্ষার টাকা পেটে পড়ছে না এতেই আমার প্রশান্তি। মানবাধিকার জোট ময়মনসিংহের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম চুন্নু বলেন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রতিটি জেলায় প্রচুর টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে সরকার। অসহায় এই পরিবারকে সরকারিভাবে সবধরনের সহায়তার পাশাপাশি বিত্তশালী ব্যক্তিদেরও এগিয়ে আশা প্রয়োজন। এ বিষয়ে ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী বলেন, পরিবারটির সম্পর্কে খোঁজখবর নেয়া হবে। প্রয়োজন হলে সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।