চুয়াডাঙ্গায় বিলুপ্তির পথে তাঁতশিল্প
আজকের টাঙ্গাইল
প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪
পুঁজির অভাব, সুষ্ঠু নীতিমালার অভাব, দফায় দফায় সুতা ও কাঁচামালের মূল্য বৃদ্ধিসহ নানান প্রতিকূলতার কারণে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার ঐতিহ্য হস্তচালিত তাঁতশিল্প বিলুপ্ত হতে চলেছে।
এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত অধিকাংশ তাঁতি ও শ্রমিকরা বেকার হয়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়ছেন। এদের মধ্যে কেউ রিকশাচালক, কেউ ভ্যানচালক, কেউ রাজমিস্ত্রি, কেউ রাজমিস্ত্রির সহকারী আবার কেউ মুদি দোকানে কাজ করছেন।
এখন আলমডাঙ্গার এরশাদপুর গ্রামে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ তাঁতের কাজ করেন। হাতেগোনা কয়েকজন যারা এ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছেন তাদের বাপ-দাদার তিনপুরুষের পুরোনো পেশা হিসেবে আর কতোদিন লোকসান গুণবে এই দুশ্চিন্তায় প্রহর গুণছেন তারা। আগে ওই এলাকার প্রতিটি ঘরে ঘরে তাঁত থাকলেও বর্তমানে মাত্র ৪০-৫০টি পরিবারে তাঁত রয়েছে।
বস্ত্র তৈরির ইলেকট্রিক আধুনিক যন্ত্রপাতি, ফ্যাশনে ভিন্নতা, পোশাকে আধুনিকতার ছোঁয়া হাতে তৈরি তাঁতশিল্পকে হার মানিয়েছে। হস্তচালিত এসব তাঁতে এখন শুধু গামছা তৈরি হয়। মুনাফা কমে যাওয়ায় তরুণ প্রজন্মের কেউ তাঁত পেশায় আর আসতে চায় না। অভিভাবকরাও চান না অনিশ্চিত ভবিষ্যতের এই কাজে জড়িয়ে পড়ুক তাদের ছেলেমেয়েরা।
তাঁতিরা বলছেন, এখন থেকে পঁচিশ বছর আগেও এরশাদপুর গ্রামে তাঁতশিল্প ছিল জমজমাট। ভোরে তাঁতকলের শব্দ ও শ্রমিকদের কোলাহলে মুখর হয়ে উঠত তাঁতঘরগুলো। কিন্তু বর্তমানে সুতার দাম বেশি ও ইলেকট্রিক তাঁত না থাকায় তাদের বাপ-দাদার পৈত্রিক ব্যবসা গুটাতে হচ্ছে। কালের বিবর্তনে আধুনিক যন্ত্রপাতির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে টিকতে না পেরে আজ তারা বিলুপ্তির পথে।
স্বাধীনতার আগে এরশাদপুর গ্রামের পাঁচ শতাধিক পরিবার তাঁতশিল্পের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এখানে প্রায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ৫ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। কাকডাকা ভোরে তাঁতকলের খটখট শব্দে ঘুম ভাঙত সবার। তাঁতশ্রমিকের কলরবে এরশাদপুর গ্রাম থাকত সরগরম। এখন আর তেমন শব্দ নেই। সেই তাঁতঘরগুলোর অধিকাংশই এখন আর নেই। আগে এখানকার তৈরি লুঙ্গি, গামছা ও তোয়ালের সুনাম ছিল দেশজুড়ে। আলমডাঙ্গা রেলস্টেশনের পাশে ছিল তাঁতের তৈরি কাপড়ের বড় মোকাম। এ ছাড়া কুষ্টিয়ার পোড়াদহ ও পাবনার শাহজাদপুর হাটও এরশাদপুরের তাঁতের লুঙ্গি-গামছার দখলে ছিল।
তাঁতি পাড়ায় দেখা যায়, শান্তনা খাতুন নামে এক মাঝবয়সী নারী তাঁতে গামছা তৈরি করছেন। তিনি জানান, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সংসার তার। স্বামীহারা এই মাঝবয়সী নারী সংসারের কাজের ফাঁকে কিছু টাকা আয়ের জন্য সারা বছর তাঁতে গামছা বুনেন।
পাশের বাড়ির রহমত উল্লাহও নির্ভরশীল ছিলেন এ পেশায়। তবে এখন নেই। কেন ছেড়ে দিয়েছেন এ পেশা- এমন প্রশ্নের জবাবে রহমত উল্লাহ বলেন, এ পেশায় এখন আর তাঁতিদের পেটে ভাত জোটে না। শ্রমিক দুই গজ গামছা বুনলে মজুরি পাবেন ৩০ টাকা। এ মূল্যে সারাদিন কাজ করলে শ্রমিকের মূল্য হয় এক থেকে দেড়শ টাকা। তা দিয়ে বর্তমানে কোনো পরিবারের সংসার চলতে পারে না। যে কারণে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে পেটের দায়ে ভিন্ন পেশায় চলে গেছি।
আরেক তাঁতি তসলিমা খাতুন বলেন, এ কাজে লাভ না হওয়ায় স্বামী আব্দুল মান্নান রাজমিস্ত্রির সহকারীর কাজ বেছে নিয়েছেন। আমি মাঝে মাঝে কাজের ফাঁকে ফাঁকে দিনে ৪টি গামছা তৈরি করি। এতে খরচ খরচা বাদ দিয়ে আমার সারাদিনে লাভ হয় মাত্র ৬০ টাকা। আমিও এ কাজ ছেড়ে দেব।
গ্রামের ৮০ বছরের বৃদ্ধ তাঁতি আবু তাহের বলেন, কৃষি ব্যাংক থেকে ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে তিনটি তাঁত চালাতাম। বর্তমানে ঋণ সুদে-মূলে দেড় লাখ টাকা দাঁড়িয়েছে। লাভ না হওয়ায় তাঁত বন্ধ করে দিয়েছি। এখন ঋণ পরিশোধ নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় আছি।
তিনি বলেন, তাঁতশিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে এ মুহূর্তে প্রয়োজন এ কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের আধুনিক প্রশিক্ষণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি এবং তাঁতিদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করা। এক্ষেত্রে সরকার আন্তরিক হলে তাঁতিরা তাদের অতীত পেশা নিয়ে টিকে থাকতে পারবেন।
তাঁতি আতিয়ার রহমান জানান, তিনি ৫০ বছর ধরে তাঁতের কাজ করছেন। বর্তমানে তাঁতের তৈরি গামছা বিক্রি করে লাভ না হওয়ায় তার তিন ছেলে এবং এক মেয়ে অন্য পেশায় চলে গেছেন। তার দাবি, তাঁতিদের সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করে এবং রঙ ও সুতার দাম কমালে শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী এই তাঁতশিল্পের হারানো গৌরবকে উদ্ধার সম্ভব হবে।
তাঁতি পপি খাতুন বলেন, ৩০ বছর আগে আমার আটটি তাঁত ছিল। আমরা গামছা ও লুঙ্গি বুনতাম। ওই সময় প্রতিদিন ৮০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা লাভ হতো। বর্তমানে সুতার মূল্য বেড়ে যাওয়ায় এখন দিনে ১০০ টাকাও লাভ হয় না। এ কারণে বর্তমানে শুধু একটা তাত চালু রেখেছি। মেশিনের তৈরি নানাবিধ পণ্যসামগ্রী বাজারে আসায় দেশীয় তৈরি কাপড়ের চাহিদা একেবারেই কমে গেছে।
তাঁতি জহুরা খাতুন বলেন, আমাদের হস্তচালিত তাঁত কুটিরশিল্পের কারণে বিলুপ্তির পথে। এখন ইলেকট্রিক পয়েন্টের তাঁতশিল্পের যুগ। সরকার প্রণোদনা বা ঋণ দিয়ে আমাদের ইলেকট্রিক পয়েন্টে তাঁতের ব্যবস্থা করে দিলে এ শিল্প আবার ঐতিহ্য ফিরে পাবে।
তাঁতিদের মহাজন মহিউদ্দিন বাগু বলেন, আধুনিক বস্ত্রের বাজারে আমাদের তাঁতের বাজার মার খাচ্ছে। এলাকার তাঁতিরা হাতের সাহায্যে পণ্য তৈরি করেন। আধুনিক মেশিন কিনতে সরকার সুদবিহীন ব্যাংক ঋণের ব্যবস্থা করলে তাঁতিদের পেশা বদল করতে হবে না। সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলেই তাঁতিরা আবার ঘুরে দাঁড়াতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, সাড়ে ১০ ভরি ওজনের এক বান্ডিল সুতা ১০ বছর আগে বিক্রি হতো ৪০০ টাকা দরে। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার টাকায়।
আলমডাঙ্গা কেন্দ্রীয় তন্তু সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা বলেন, দেশ স্বাধীনের পর প্রায় ৩৫ বার সুতার দাম বেড়েছে। রঙ, সুতাসহ অন্যান্য কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় গামছার উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এ ছাড়া অন্য সব পেশার মানুষ করোনাকালীন বিভিন্ন প্রণোদনা ও সহযোগিতা পেলেও এখানকার তাঁতিরা তা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। তারা খেয়ে না খেয়ে সময় পার করলেও কেউ খোঁজ নেননি।
চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজের সভাপতি ইয়াকুব হোসেন মালিক বলেন, তাঁত শিল্প বাঁচিয়ে রাখতে এ মুহূর্তে সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। তবে সবার আগে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
- চুয়াডাঙ্গায় বিলুপ্তির পথে তাঁতশিল্প
- রাজশাহীর সাবেক এমপি এনামুল গ্রেফতার
- বিকট শব্দে হঠাৎ বজ্রপাত, প্রাণ গেল কৃষকের
- কুড়িগ্রামে খিচুড়ি বিতরণ নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষ
- টাঙ্গাইলে যা বললেন কেন্দ্রীয় জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান
- শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিকদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা সভা
- দেশ ছাড়ার গুঞ্জনে যা বললেন আসিফ নজরুল
- তিতাস গ্যাস পরিচালনা পর্ষদ থেকে মতিউর রহমানের নাম প্রত্যাহার
- ডিএমপির ১৪ কর্মকর্তাকে বদলি
- ‘হতাহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ’
- ২০০ একর জমি ফেরত দেবে ভারত
- মহানবীর আদর্শ শীর্ষক আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত
- বৈরী আবহাওয়ায় এলএনজি সরবরাহে বিঘ্ন
- ভোলায় আরো সাড়ে ৬ লাখ কোটি টাকার গ্যাসের সন্ধান
- ড. ইউনূসের প্রথম একনেক সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় ৮ প্রকল্প
- সীমান্তে বিএসএফের হত্যা বন্ধে তিন বিশ্বনেতার কাছে ২০১ বিশিষ্টজনের
- দেশের সাত মেগা প্রকল্পের ব্যয় যাচাই হবে
- পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) পালিত
- জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে আহতদের যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসন দাবি
- অবিলম্বে মিথ্যা ও গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের দাবি মির্জা ফখরুলের
- নবী করিম (সা.)-এর জীবন অনুসরণ করে জীবন আচরণ পরিবর্তনের আহ্বান
- গত সাড়ে ১৭ বছর গোটা জাতি বন্দী ছিল : ডা. শফিকুর রহমান
- মহানবী (সা.) এর পুরো জীবনটাই আমাদের জন্য আদর্শ : ধর্ম উপদেষ্টা
- যানজট সমস্যার সমাধান খোঁজার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
- ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে সিলেটে ঈদে মিলাদুন্নবী পালিত
- নাগরিকদের সহজ ভূমি সেবা প্রদান করতে হবে : চট্টগ্রামে উপদেষ্টা
- টাঙ্গাইলে পবিত্র ঈদ-এ- মিলাদুন্নবী পালিত
- ছাত্র হত্যা : এসআই শাহাদাৎ রিমান্ডে
- মার্কিন প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের আর্থিক স্থিতিশীলতায় সহায়তা
- সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অভিযোগে গ্রেফতার দুই পুলিশ সদস্য
- ২৪ ঘণ্টায় ৯৮৫৭ বন্যার্তকে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে সশস্ত্র বাহিনী
- নির্বাচন আয়োজনে অযৌক্তিক সময় নষ্ট করবো না: ড. ইউনূস
- এবার বন্যার ঝুঁকিতে উত্তর-পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চল
- নুরুল ইসলাম মনি বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান মনোনীত
- প্রথম অগ্রাধিকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা
- ইসলামপুরে আ.লীগের ৩১ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
- রেমিট্যান্সের পালে হাওয়া, সাতদিনে এলো ৭ হাজার ১৪ কোটি টাকা
- রাজ্য সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে বাংলাদেশকে অনুসরণ করা হচ্ছে: মমতা
- বন্যার্তদের সহায়তায় নৌবাহিনী সদস্যদের এক দিনের বেতন প্রদান
- সিটি গ্রুপে নারী-পুরুষের চাকরির সুযোগ, কর্মস্থল ঢাকা
- ১৬ দফা দাবিতে সাভারে ওষুধ শ্রমিকদের কর্মবিরতি, চাকরিচ্যুত ৫৬
- ঢেলে সাজানো হচ্ছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রশাসন
- পানি উন্নয়ন বোর্ডের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল
- আজ আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস
- বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে ফিরিয়ে আনবে
- ডিআইজি পদে পদোন্নতি পেলেন ৭৩ পুলিশ কর্মকর্তা
- বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকে তারেক রহমানের অভিনন্দন
- সেনাবাহিনীর অভিযানে মাদক উদ্ধার, গ্রেফতার ১
- বঙ্গোপসাগরে ট্রলারডুবিতে ২ জনের মৃত্যু, খোঁজ মেলেনি ৫ শতাধিক জেলে
- কিশোরগঞ্জে শেখ হাসিনা-ওবায়দুল কাদেরসহ ৮৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা